September 22, 2024, 5:20 am

সংবাদ শিরোনাম
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ফয়জুল আজীম নোমান এর যোগদান জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে শহীদ জিয়া ও সকল শহীদদের স্মরণে স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি কু‌ড়িগ্রা‌মের উলিপু‌রে বিদ‌্যুৎস্পৃষ্টএক যুব‌কের মৃত্যু যশোরে বালিচাপা অবস্থায় প্রতিবন্ধী যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে ৪০ পিস ইয়াবা ও ১ টি ভ্যান জব্দসহ ২ জন মাদক কারবারি গ্রেফতার জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফর রহমান মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধে কুড়িগ্রামে জলবায়ু ধর্মঘট খুলনা দৌলতপুর রেলস্টেশন ও মহসিন মোড় কাঁচাবাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

কোটা সংস্কারের আন্দোলন যৌক্তিক ন্যায়সঙ্গত: অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম

কোটা সংস্কারের আন্দোলন যৌক্তিক ন্যায়সঙ্গত: অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে ‘যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত’ বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনাকে ‘দুঃখজন্ক, লজ্জাজনক ও অবিশ্বাস্য’ বলেছেন তিনি। আন্দোলনকারীদের নিপীড়ন-হয়রানির প্রতিবাদ, গ্রেপ্তার ছাত্রদের মুক্তি ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল রোববার ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে পদযাত্রা শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।   গতকাল রোববার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত এই পদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, স্ট্যামফোর্ড, ইউল্যাব ও ইন্ডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩৫ জন শিক্ষক অংশ নেন। শতাধিক শিক্ষার্থীও তাদের সঙ্গে ছিলেন।

সমাবেশে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে পাঁচটি দাবি উপস্থাপন করেন অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন।

দাবিগুলো হচ্ছে- সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকল হামলাকারীদের বিচার, আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, সরকারিভাবে আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, নারী আন্দোলনকারীদের শারীরিক ও সাইবার যৌন নিপীড়নের বিচার, এবং দ্রুত কোটা সংস্কারের প্রতিশ্রুত প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে দেওয়া।

সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে কয়েক মাস আগে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে গড়ে ওঠা আন্দোলন ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ার একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা পদ্ধতি আর না রাখা এবং এজন্য একটি কমিটি করার কথা বলেছিলেন সংসদে।

কিন্তু কমিটির কোনো ঘোষণা না আসার মধ্যে ফের আন্দোলন শুরু হলে কয়েক দফা আন্দোলকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গ্রেপ্তার হন আন্দোলকারীদের কয়েক নেতা। এই প্রেক্ষাপটে গত ২ জুলাই রাতে কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন আসে।

শহীদ মিনারে সমাবেশে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, যে ঘটনার জন্য আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি তা দুঃখজনক তো বটেই লজ্জাজনক এবং অবিশ্বাস্য। বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটবে তা আমরা কখনো ভাবিনি। এটা পাকিস্তান আমলে ঘটেনি, ব্রিটিশ আমলেও ঘটেনি। কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে ‘যৌক্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, আন্দোলন যখন চলছিল তখন তখন সমাজের সকল অংশ যেভাবে তাদের সমর্থন দিয়েছিল তাতেই বোঝা যায় শতকরা ৫৬ ভাগ কোটা অসন্তোষজনক। সরকারও সেটা স্বীকার করেছে। সরকার সেটা স্বীকার করে কমিটি গঠন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কমিটি গঠনে বিলম্ব করেছে, বিলম্ব করার কারণে আবার আন্দোলন হয়েছে। এই আন্দোলন যদি তারা অব্যাহত না করত তাহলে কমিটি গঠন হতো না।

শিক্ষকদের পাঁচ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন করা হয়েছে, অভিভাবক ও শিক্ষকরা যখন তাদের জন্য দাঁড়াল তাদের ওপরও নিপীড়ন চালানো হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হাতুড়ি দিয়ে যে নৃশংশতা চালানো হয়েছে, এধরনের নৃশসংশতা আমরা আগে কখনো দেখিনি। যারা আহত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হয়েছে, রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। যে দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে তার সাথে আমার পূর্ণ সমর্থন আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, বাংলাদেশ যে তৈরি হয়েছে এবং বাংলাদেশ তৈরি হবার সূচনা হয়েছিল ১৯৪৮ সালে তখন যে ‘না না না’ উচ্চারিত হয়েছে তা কিন্তু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এই যে না বলার শক্তি, এই না বলা থেকেই বিভিন্ন আন্দোলন হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা বের হয়ে এসেছিলেন, গড়ে তুলেছিলেন এই শহীদ মিনার, ১৯৭১ সালে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল, তা আবার গড়া হয়েছে। সেই শহীদ মিনারের সামনে আমরা দেখেছি প্রতিবাদরত একজন শিক্ষার্থীকে কিভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।  এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সাথে ছিলেন, আরো বেশি থাকবেন।

সম্প্রতি অবসরে যাওয়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যাপক আখতার হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের যে আন্দোলন করছে, তাকে চিত্রিত করা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী হিসেবে। তাদেরকে বলা হচ্ছে বিএনপি-শিবির দ্বারা প্ররোচিত। বাংলাদেশ ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে। আজকে ছাত্ররা যে ন্যায়সঙ্গত দাবি করছে এর বিরুদ্ধে যারা অবস্থান করছে, শিক্ষক, প্রশাসনের কর্তা এবং রাজনৈতিক নেতারা যারা আছেন, তাদের প্রত্যাখ্যানের ভাষা নিন্দনীয়। একটি তরুণকে যখন চিকিৎসা নিতে গেলে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা বুঝি বাংলাদেশে গণতন্ত্র কোন পর্যায়ে আছে। আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “আমি মনে করি, সবাই মনে করে, এমনকি বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং শিক্ষক সমিতিও, যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছিল, তখন সংহতি জানিয়ে বলেছে এটা একটা ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন।

তিনি বলেন, প্রতিবাদ করার অধিকার যারা অস্বীকার করে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, তারা সংবিধানবিরোধী। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং ছাত্রদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাসনিম সিরাজ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর কাজী আফসার হোসেন।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর